বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্তিকরণের কারণ:
একটি ক্যাটায়নের উপস্থিতিতে অন্য ক্যাটায়নের সনাক্তকরণে অনেক ক্ষেত্রে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। উদাহরণস্বরূপ কপার আয়ন সনাক্তকরণের একটি পরীক্ষা হচ্ছে দ্রবণে পটাসিয়াম ফেরোসায়ানাইড দ্রবণ যোগ করা। Cu2+ আয়ন দ্রবণে উপস্থিত থাকলে কালচে বাদামী বর্ণের কপার ফেরোসায়ানাইডের অধঃক্ষেপ সৃষ্টি হয়। অপরদিকে ফেরিক আয়নের পরীক্ষাও পটাসিয়াম ফেরোসায়ানাইড দ্রবণ যোগ করে করা হয়। দ্রবণে ফেরিক আয়ন উপস্থিত থাকলে ঘন নীল বর্ণের ফেরিক ফেরোসায়ানাইডের অধঃক্ষেপ সৃষ্টি হয়। সুতরাং পরস্পরের উপস্থিতিতে ফেরিক ও কপার আয়নের পরীক্ষা পটাসিয়াম ফেরোসায়ানাইড দ্বারা করলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হবে।
Related Posts
যেহেতু অন্য ক্যাটায়নের উপস্থিতিতে যে কোন ক্যাটায়নের সনাক্তকরণে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে, সেহেতু ক্যাটায়নসমূহকে যতদূর সম্ভব অন্য ক্যাটায়ন হতে পৃথক করে সনাক্তকরণ করা হয়। এ উদ্দেশ্যে প্রথমেই ক্যাটায়নসমূহকে কয়েকটি শ্রেণী বা গ্রুপে বিভক্ত করা হয়। বিভিন্ন গ্রুপে মাত্র কয়েকটি ক্যাটায়ন থাকে। পরবর্তীতে এক একটি গ্রুপের বিশ্লেষণ করা হয়। যা অনেক সহজসাধ্য হয়।
৩.২ ভিত্তিঃ ধারাবাহিকভাবে ক্যাটায়নসমূহের বিশ্লেষণের জন্য এগুলোকে কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। জলীয় মাধ্যমে বিভিন্ন অবস্থায় (অম্লীয় বা ক্ষারীয়) ক্যাটায়নসমূহের বিভিন্ন লবণের অদ্রবণীয়তার উপর ভিত্তি করে এ শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে।
আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে, বিভিন্ন ক্যাটায়নের বিভিন্ন লবণের দ্রাব্যতা গুণফলের মানের উপর ভিত্তি করে এ শ্রেণী বিভাগ করা হয়েছে। যেমন:
১। কক্ষ তাপমাত্রায় যে সকল ক্যাটায়নের ক্লোরাইড লবণের পানিতে দ্রাব্যতা গুণফল খুব কম তাদের গ্রুপ। এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। Ag+, Pb+ও Hg+ এ তিনটি আয়ন এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।
২। গ্রুপ। এর আয়নসমূহ পৃথক করার পর যে সকল আয়নের সালফাইড লবণের দ্রাব্যতা গুণফল এতই কম যে, এ সকল সালফাইড 0.3M HCI দ্রবণেও অধঃক্ষিপ্ত হয়, সে সকল আয়নকে গ্রুপ II এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ শ্রেণীর আয়নসমূহকে আবার দুটো উপশ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। যে সকল আয়নের সালফাইড হলুদ এমোনিয়াম সালফাইড ও পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্রবণে অদ্রবণীয়, তাদের IIA গ্রুপের আয়ন করা বলা হয়। Cu2+ Cd2+, P2+Bi3+ এ গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। অপরদিকে গ্রুপ II-এর তিনটি আয়নের সালফাইড হলুদ এমোনিয়াম সালফাইড ও পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্রবণীয়: এদের গ্রুপ IIB শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। As", Sb, Sn²* ও Sn" গ্রুপে অবস্থিত।
৩। গ্রুপ। ও II আয়নসমূহ পৃথক করার পর যে সকল ক্যাটায়ন থাকে, তাদের মধ্যে যে সকল ক্যাটায়নের হাইড্রোক্সাইড লবণের দ্রাব্যতা গুণফল এত কম যে, উহারা NH,CI ও NH₂OH এর উপস্থিতিতে অধঃক্ষিপ্ত হয়, উহাদের IIIA শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। Fe", Alt ও Cr'" আয়ন তিনটি এ শ্রেণীভুক্ত।
৪। গ্রুপ I, II ও III শ্রেণীভুক্ত আয়নসমূহ পৃথকীকরণের পরে যে সকল আয়ন বাদ থাকে, উহাদের মধ্যে যে সকল আয়নের সালফাইড লবণের দ্রাব্যতা গুণফল এমন যে, এ সকল লবণ এমোনিয়াম ক্লোরাইড, এমোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও হাইড্রোজেন সালফাইড এর উপস্থিতিতে অধঃক্ষিপ্ত হয়; উহাদের IIIB শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। Ni", Co", Mn Zn আয়নসমূহ এ শ্রেণীভুক্ত।
৫) গ্রুপ I, II ও IIIA ও IIIB শ্রেণীভুক্ত আয়নসমূহ পৃথক করার পরে যে সকল আয়ন বাকী থাকে, উহাদের মধ্যে যে
সকল আয়নের কার্বনেট লবণের দ্রাব্যতা গুণফল এত কম যে, উহারা NH,CI, NH4OH (NH),CO, এর উপস্থিতিতে অধঃক্ষিপ্ত হয়, উহাদের গ্রুপ IV শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। Ca", Sr²* ও Ba" এ গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। ৬। গ্রুপ । হতে গ্রুপ IV এর গ্রুপ বিকারকসমূহ যোগ করার পরেও যে সকল আয়ন অধঃক্ষেপ সৃষ্টি করে না; উহাদের গ্রুপ ৬ এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। Mg". Na". K' ও NH₁' এ শ্রেণীভুক্ত। তবে গ্রুপ IIIA, IIIB ও IV-এর আয়নসমূহ অধঃক্ষিপ্ত করণের জন্য ইতিপূর্বে এমোনিয়াম লবণসমূহ যোগ করায় গ্রুপ V এ এমোনিয়াম আয়ন অবশ্যই পাওয়া যাবেঃ
প্রদত্ত নমুনায় এ আয়ন থাকুক বা নাই থাকুক। এ কারণে গ্রুপ V-এর অন্তর্ভুক্ত হলেও এমোনিয়াম আয়নের পরীক্ষা সবার আগে (অন্ততঃপক্ষে IIIA এর আগে) করতে হয়।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, অজৈব গুণগত বিশ্লেষণে ধাতু আয়নসমূহের শ্রেণীবিভাগ ও পর্যায় সারণির শ্রেণীবিভাগ সম্পূর্ণ ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ সোডিয়াম ও পটাসিয়াম আয়ন অজৈব গুণগত বিশ্লেষণে গ্রুপ V এর সদস্য, কিন্তু পর্যায় সারণিতে উহারা IA এর সদস্য। ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, স্ট্রনসিয়াম ও বেরিয়াম পর্যায় সারণিতে IIA শ্রেণীর সদস্য হলেও গুণগত বিশ্লেষণে ম্যাগনেসিয়াম আয়ন গ্রুপ V এর সদস্য এবং অন্য তিনটি মৌলের আয়ন গ্রুপ IV এর অন্তর্ভুক্ত। এ পার্থক্যের কারণ উহাদের শ্রেণীবিভাগের ভিত্তির মধ্যেই নিহিত। পর্যায় সারণির ভিত্তি হচ্ছে মৌলের ইলেকট্রনবিন্যাস এবং মৌলের সাধারণ রাসায়নিক ধর্মাবলি। অপরদিকে অজৈব গুণগত বিশ্লেষণের ভিত্তি হচ্ছে বিভিন্ন ক্যাটায়নের বিশেষ লবণসমূহের দ্রাব্যতা গুণফলের মান।
৩.৩ গ্রুপ বিকারক (Group reagent) :যে সকল বিকারক যোগ করে দ্রবণ হতে কোন বিশেষ গ্রুপের আয়নসমূহকে একত্রে অধঃক্ষিপ্ত করা হয়, উহাদের সে গ্রুপের গ্রুপ বিকারক বলা হয়। যেমন:
১। গ্রুপ। এর গ্রুপ বিকারক লঘু HCI;
২। গ্রুপ II এর গ্রুপ বিকারক লঘু HCIএর উপস্থিতিতে H₂S:
৩। গ্রুপ IIIA এর গ্রুপ বিকারক NHLCI এর উপস্থিতিতে NH,OH: ৪। গ্রুপ IIIB এর গ্রুপ বিকারক NHLCI ও NH₂OH উপস্থিতিতে H₂S;
৫। গ্রুপ IV এর গ্রুপ বিকারক NH,CI ও NH₂OH এর উপস্থিতিতে (NH4):CO);
৬। গ্রুপ V. এর কোন গ্রুপ বিকারক নাই।
৩.৪ অজৈব গুণগত বিশ্লেষণের প্রকারভেদঃ অজৈব গুণগত বিশ্লেষণে নমুনার বিভিন্ন পরিমাণ ব্যবহার করা যায়।
এ পরিমাণের উপর ভিত্তি করে অজৈব গুণগত বিশ্লেষণকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
(১) ম্যাক্রো বিশ্লেষণ (Macro analysis)
(২) সেমিমাইক্রো বিশ্লেষণ (Semimicro analysis)
(৩) মাইক্রো বিশ্লেষণ (Micro analysis)।
ম্যাক্রো বিশ্লেষণে এক একটি পরীক্ষায় সাধারণত প্রায় ০.৫-১ গ্রাম কঠিন পদার্থ ব্যবহৃত হয়। এতে দ্রবণসমূহের গড় আয়তন প্রায় ২০ মি.লি. থাকে। বাংলাদেশের প্রায় সকল কলেজে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে।
সেমিমাইক্রো বিশ্লেষণে এক একটি পরীক্ষায় প্রায় ০.১ গ্রাম হতে ০.৫ গ্রাম বস্তুর প্রয়োজন হয়। দ্রবণের পরিমাণ ১ মি.লি. হলেই চলে। মাইক্রো বিশ্লেষণে বস্তুর পরিমাণ ০.০১ গ্রাম বা তার কম হয়।
এ সকল পদ্ধতির মৌলিক কোন পার্থক্য নেই; প্রধানত বস্তুর পরিমাণে পার্থক্য থাকে, এ কারণে যন্ত্রপাতিতেও পার্থক্য থাকে। তবে মাইক্রো ও সেমিমাইক্রো পদ্ধতিতে কিছু কিছু বিকল্প বিকারক ব্যবহৃত হয়। মাইক্রো ও সেমিমাইক্রো পদ্ধতিতে অল্প বস্তু ব্যবহৃত হয় বলে বিভিন্ন ভৌত প্রক্রিয়া, যেমন পৃথকীকরণ, ধৌতকরণ প্রভৃতি দ্রুত সম্পন্ন হয়, ফলে সময় কম লাগে। বিকারক কম ব্যবহৃত হওয়ায় খরচও কমে। অপরদিকে এ সকল পদ্ধতিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি দামী হয় বিশেষ করে মাইক্রো পদ্ধতিতে।
সেমিমাইক্রো পদ্ধতি ব্যবহারের সুফলঃ
সেমিমাইক্রো পদ্ধতিতে কম পরিমাণ বিকারকসমূহ প্রয়োজন হয়। রাসায়নিক বিকারকসমূহের দাম খুব বেশি। সুতরাং এ পদ্ধতি ব্যবহারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের অনেক টাকা সাশ্রয় হয়; যার ফলে অধিক সংখ্যক দিন ছাত্রদের ব্যবহারিক ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়। এছাড়া এ পদ্ধতিতে কাজ অনেক শীঘ্র শেষ হয়। হাইড্রোজেন সালফাইড অত্যন্ত মারাত্মক বিষ। কিপ যন্ত্র হতে বিভিন্ন দ্রবণের মধ্য দিয়ে এ গ্রাসে প্রবাহের সময় এক বড় অংশ গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে, যা শ্বাসের সাথে ছাত্রদের শরীরে প্রবেশ করে। এর ফলে বেশ ক্ষতি হয়, যা তৎক্ষণাৎ ধরা না পড়লেও দীর্ঘদিন যাবৎ এ ক্ষতি একত্রিত হয়ে পরে জটিল আকার ধারণ করতে পারে। সেমিমাইক্রো পদ্ধতিতে
H.S-এর পরিবর্তে খায়ো এসিটামাইড ব্যবহৃত হয়। এটি পানির সাথে বিক্রিয়া করে দ্রবণে H₂S উৎপন্ন করে, যার প্রায় সম্পূর্ণ অংশ দ্রবণে থেকে যায় বা বিক্রিয়া করে। ফলে আবহাওয়া বিশেষ দূষিত হয় না।
CHCSNH+H₂OCH,CONH: + H₂S
এ বিক্রিয়া সাধারণত তাপমাত্রায় খুব ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়, তাই দ্রবণকে ব্যবহারের সময় উত্তপ্ত করতে হয়।
রাসায়নিক পরীক্ষাগারে সাধারণ অনেক দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয় বলে তা সাধারণের নিকট অপ্রীতিকর, বিজ্ঞানের ছাত্রদের জন্যও তা খুব প্রিয় স্থান নয়। H.S ব্যবহৃত না হলে দুর্গন্ধ অনেকাংশে হ্রাস পায়, ফলে এ দুর্নাম কিছুটা লাঘব হয় এবং ছাত্ররাও কিছুটা ভাল পরিবেশে কাজ করার সুযোগ পায়; স্বাস্থ্যহানি অনেক কম হয়।
এ সকল কারণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেমিমাইক্রো পদ্ধতি ব্যবহারের সুপারিশ করা হচ্ছে।
মাইক্রো পদ্ধতি: মাইক্রো পদ্ধতি সবচেয়ে আধুনিক; তবে এতে বিশেষ ধরনের দামী যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হয় বলে বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে এ পদ্ধতি অবলম্বন করা সম্ভব নয়। তাই এ পদ্ধতি উল্লেখিত হয়নি।
৩.৫ ক্ষারকীয় মূলকসমূহের ধারাবাহিক গ্রুপ বিশ্লেষণঃ
(a) নমুনার দ্রবীভূতকরণঃ ক্ষারকীয় মূলকসমূহের ধারাবাহিক বিশ্লেষণের জন্য প্রথমে নমুনা লবণকে দ্রবীভূত করার প্রয়োজন হয়। প্রথমে লবণকে পানি (ঠাণ্ডায় ও গরম) দ্বারা দ্রবীভূত করার চেষ্টা করা হয়। নমুনা লবণ পানিতে দ্রবীভূত হলে কাজ খুব সহজ হয়ে পড়ে। নমুনাটি পানিতে আংশিকভাবে দ্রবীভূত হলে তা ছেঁকে নেওয়া হয় এবং জলীয় দ্রবণকে পৃথক করে রাখা হয়। অদ্রবণীয় অংশকে প্রথমে লঘু HCI(ঠাণ্ডা ও গরম) এ দ্রবীভূত করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় অনেক ধাতু অক্সাইড, কার্বনেট, হাইড্রোক্সাইড, সালফাইড, ফসফেট, বোরেট, ফ্লুরাইড প্রভৃতি হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে দ্রবণীয় ধাতু ক্লোরাইড সৃষ্টি করে। ফলে লবণটি আংশিক বা পুরোপুরিভাবে দ্রবীভূত হয়। যেমন-
CaF2+2HCl=CaCl₂ + 2HF
ZnO + 2HCl = ZnCl2 + H₂O
CuCO3 + 2HCl = CuCl + CO2 + H₂O
Mg3(PO4)2 + 6HCl = 3MgCl2 + 2H,PO
MnS+2HCl=MnCl2 + H₂S
এ সময় কোন অংশ অদ্রবীভূত থাকলে তা গরম HCI এ দ্রবীভূত করার চেষ্টা করা হয়: যখন; উপরোক্ত বিক্রিয়াসমূহের কারণে নমুনা দ্রবীভূত হতে পারে।
ঘন HCI এ দ্রবীভূত অংশকে কয়েক ফোঁটা রাজস্র (aqua regia) এর সাথে উত্তপ্ত করা হয়। ১৯৩ অনুপাতে ঘন HNO ও ঘন HCI এর মিশ্রণকে রাজন্ন বলা হয়। ইহা প্রকৃতপক্ষে কোন দ্রাবক নয়; ইহা কয়েকটি লবণের সাথে বিক্রিয়া করে ধাতু ক্লোরাইড উৎপন্ন করে।
NIS + 2HNO, + 2HCl=NiCl2 + H₂SO₄ + NO2 + H₂O
মনে রাখা উচিত ঘন HNO, গ্রুপ II এর গ্রুপ বিকারক H.S এর সাথে বিক্রিয়া করে। সে কারণে রাজন্ন ব্যবহৃত হলে তা- সম্পূর্ণভাবে শুকায়ে HCI ও HNO, কে দূরীভূত করতে হবে। পরে সৃষ্ট ধাতু ক্লোরাইডকে পানিতে দ্রবীভূত করতে হবে। রাজম্ন ব্যবহার করার পরেও নমুনার কিছু অংশ অদ্রবণীয় থাকতে পারে। এ অংশকে "অদ্রবণীয় লবণ" বলা হয় এবং উহা বিশ্লেষণের জন্য সম্পূর্ণ পৃথক একটি পদ্ধতি ব্যহার করতে হয়। এ সম্পর্কে পরবর্তীতে একটি পৃথক অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন দ্রাবক (পানি, লঘু ও ঘন HCI ও রাজন্ন) ব্যবহার করে যে দ্রবণসমূহ পাওয়া যায়, উহাদের একত্রিত করে, ক্যাটায়নসমূহের ধারাবাহিক বিশ্লেষণ করা হয়। এ দ্রবণকে "মূল দ্রবণ" বলা হয়। মনে রাখা উচিৎ, এ দ্রবণকে ক্যাটায়নসমূহের বিশ্লেষণেই শুধুমাত্র ব্যবহার করা হয়। এনায়নের পরীক্ষায় এটি ব্যবহারের সময় যথেষ্ট সাবধানতা অনুসরণ করব।