তাপগতিবিদ্যার ১ম সূএে আমরা জেনেছি , তাপকে কাজে এবং কাজকে তাপে রুপান্তরিত করা সম্ভব এবং যেকোন শক্তি রুপান্তরের ক্ষেএে মোট শক্তি সংরক্ষিত থাকে। তাপগতিবিদ্যার ২য় সূএ মুলত ১ম সূএের একটি সংশোধিত রুপ বলা যায়।
তাপ স্বাভাবিকভাবেই উষ্ণ বস্তুু থেকে কম উষ্ণ বস্তুুতে সঞ্চালিত হয় যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের তাপমাত্রা সমান হয় এবং তাপমাত্রা সমান হলে তাপ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়।
আবার কোন কাজ বা শক্তির তাপে পরিনত করা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তুু তাপশক্তিকে অন্য শক্তিতে রুপান্তরের স্বাভাবিক প্রবণতা নেই। তাই তাপকে সম্পূর্ণরুপে কাজে পরিনত করা সম্ভব নয়। যেমন:
আমরা হাতের তালু ঘসলে যান্ত্রিক শক্তি তাপশক্তিতে রুপান্তরিত হয় কিন্তুু এই তাপশক্তিকে আবার কাজে পরিনত করা যায় না। মুলত এসব বাস্তব ধারনা থেকেই তাপগতিবিদ্যার ২য় সূএের অবতারণা। তাপগতিবিদ্যার ২য় সূএকে বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে বিবৃত করেছেন। এর মধ্যে প্লাংক,কেলভিন এবং ক্লসিয়াসের বিবৃতি সবচেয়ে প্রসিদ্ধ
। নিচে মতবাদগুলো দেওয়া হলো :
1.প্লাংকের মতবাদ:
এমন একটি ইঞ্জিন পরিকল্পনা করা কখনোই সম্ভব নয়,যার পূর্ন আর্বতনে কেবল একটি তাপীয় উৎস হতে তাপ সংগৃহীত হবে এবং অন্যএ কোন পরিবর্তন ব্যাতীত সংগৃহীত তাপের সবটুকুই কাজে পরিনত করা যাবে।
প্লাংকের মতবাদে পূর্ন আবর্তন ও অন্যএ পরিবর্তন - এর উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ইঞ্জিনের দৃষ্টিকোন থেকে সূএকে প্রকাশ করা হয়েছে। ইঞ্জিন যদি প্রাথমিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তন না করে, তবে গৃহীত তাপ সম্পূর্ণরুপে কাজে পরিনত করতে পারে।
2.কেলভিনের মতবাদ:
কোন বস্তুু বা উৎস হতে তাপ সংগ্রহ করার ফলে যখন এর তাপমাত্রা পারিপার্শ্বিকের বস্তুুগুলোর মধ্যে শীতলতম তাপমাত্রা অপেক্ষাও কম হয় তখন আর কোন যান্ত্রিক ব্যাবস্থার সাহায্যেই (ইঞ্জিন কতৃর্ক) তা হতে তাপ সংগ্রহ করে কাজ করা সম্ভব নয়।
অর্থাৎ কোন উৎস হতে তাপ গ্রহন করে ইঞ্জিন চালনা করা ততক্ষণই সম্ভব যতক্ষণ ঐ উৎস হতে কম তাপমাত্রার আর একটি উৎস বর্তমান। এক্ষেত্রেও ইঞ্জিনের দৃষ্টিকোণ থেকে ২য় সূএ প্রকাশ করা হয়েছে।
3.ক্লসিয়াসের মতবাদ :
কোন যন্ত্রের পক্ষেই বাইরের জগতে পরিবর্তন সৃষ্টি ব্যাতীত এর পূর্ন আবর্তনে একটি তাপীয় উৎস হতে তাপ সংগ্রহ করে ঐ তাপ উষ্ণতর অন্য কোন বস্তুুতে চালনা করা সম্ভব নয়।
অর্থাৎ বাইরে থেকে কাজ না করলে কোন যন্ত্রের পক্ষেই শীতল বস্তুু হতে উষ্ণতর বস্তুুতে তাপ চালনা কর সম্ভব নয়। বিজ্ঞানী ক্লসিয়াস হিমায়কের দৃষ্টিকোণ থকে তাপগতিবিদ্যার ২য় সূএকে বিবৃত করেছেন।
তাপগতিবিদ্যার ২য় সূএ বিভিন্নভাবে বিবৃত হলেও প্রত্যেকটি মুলত একই ধারনাকে সমর্থন করে। আরো কিছু জেনে নাও,
1. সমোষ্ণ প্রক্রিয়া (Isothermal Process):
যে প্রক্রিয়ায় কোন সিস্টেমের তাপমাত্রা স্থির রেখে চাপ ও আয়তন পরিবর্তন হয় তাকে সমোষ্ণ প্রক্রিয়া বলে।
এই প্রক্রিয়া একটি ধীর প্রক্রিয়া ও পাএের দেওয়াল থাকে সুপরিবাহী। পরিবেশের সাথে তাপ আদান -প্রদানের সুযোগ পায়। এটি মুলত বয়েলের গ্যাসের সূএ।
2. রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া (Adiabatic Process):
যে প্রক্রিয়ায় কোন সিস্টেমের চাপ, আয়তন ও তাপমাত্রার কোন পরিবর্তন হয় কিন্তুু পরিবেশের সাথে তাপের আদান-প্রদান হয় না তাকে রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া বলে।
এই প্রক্রিয়া একটি দ্রুত প্রক্রিয়া। পাএের দেয়াল যথাসম্ভব কুপরিবাহী তৈরি করতে হয়।