কাজ(work)
সাধারণভাবে কোন কিছু করাকে কাজ বলে। কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানে একে কাজ বলে না কাজ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত আছে। যেমন:
কাজ হতে হলে অবশ্যই বল প্রয়াগ করলে বস্তুুর সরন ঘটলে তখনই কেবল কাজ হয়।
কোন বস্তুুর উপর বল প্রয়োগে বস্তুুর সরন ঘটলে প্রযুক্ত বল ও বলের অভিমুখে সরনের উপাংশের গুণফলকে কাজ বলে। অর্থাৎ
কাজ = বল x বলের দিকে সরনের উপাংশ
বা, W= Fs.cos@
[ থিটা এর পরিবর্তে @ চিহ্ন ]
কাজ একটি স্কেলার রাশি কারন দুইটি ভেক্টর রাশি F আর s এর ডট গুনফল গুনফলের মান একটি স্কেলার রাশি। ডট গুনফল একটি স্কেলার গুণন। তাই কাজ একটি স্কেলার রাশি।
a. বলের দ্বারা কাজ :
কোন বস্তুুর উপর বল প্রয়োগে বলের প্রয়োগবিন্দু তার অভিমুখে সরে যায় বা বলের দিকে সরনের উপাংশ থাকে, তাহলে বলের দ্বারা কাজ বুঝায়। এক্ষেএে বলের দ্বারা কাজ ধনাত্মক কাজ। বলের দিকে কাজ হলে স্থিতিশক্তি হ্রাস পায়,গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। কাজ সর্বোচ্চ হবে যদি বল ও সরনের মধ্যবর্তী কোন 0 degree হয়।
b. বলের বিরুদ্ধে কাজ :
কোন বস্তুুর উপর বল প্রয়োগে যদি সরন বলের বিপরীত দিকে হয় অর্থাৎ বলের অভিমুখের বিপরীত দিকে বলের প্রয়োগবিন্দু সরে যায় সেক্ষেত্রে, বলের বিরুদ্ধে কাজ হয়।এক্ষেত্রে বলের বিপরীতে কাজ ঋণাত্মক। বলের বিপরীতে কাজ হলে বিভবশক্তি বা স্থিতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। কাজ সর্বনিম্ন হবে যদি বল ও সরনের মধ্যবর্তী কোন 180 degree হয়।
c. শূন্য কাজ বা কার্যহীন বল :
কোন বস্তুুর উপর বল প্রয়োগে যদি সরন লম্বভাবে ঘটে কৃতকাজ শূন্য হয়। এক্ষেত্রে সরনের অভিমুখে বলের উপাংশ শূন্য। বল প্রয়োগে বস্তুুর সরন বলের অভিমুখ সমকোণে ঘটে তাকে কার্যহীন বল বলে।কেন্দ্রমুখী বা অভিকেন্দ্র বল একটি কার্যহীন বল।
d. ধ্রুব বল দ্বারা কৃতকাজ :
বল সাধারণত দুই প্রকার; যথা - ধ্রুব বল এবং পরিবর্তনশীল বল।
★ধ্রুব বল: সময়ের প্রেক্ষিতে বলের মান ও দিক পরিবর্তন না হলে তাকে স্থির বা ধ্রুব (constant) বল বলে।
এক্ষেত্রে কৃতকাজ =বলের মান x বলের ক্রিয়ারেখা বরাবর সরনের মান
W= F x (-s)
বা,W=Fs.cos@
e. পরিবর্তনশীল বল দ্বারা কৃতকাজ :
★যে বলের মান ও দিকের অথবা যেকোন একটির পরিবর্তন ঘটে তাই পরিবর্তনশীল বল।
♦ বলের মান যখন পরিবর্তনশীল তখন ও কৃতকাজ,
W=Fs.cos@
♦বলের মান ও দিক যখন উভয়ই পরিবর্তনশীল তখনও কৃতকাজ,
W=Fs.cos@
f. স্থিতিস্থাপক বল দ্বারা কৃতকাজ :
একটি স্প্রিংকে টেনে প্রসারিত করলে মনে হয় যে, স্প্রিং আমাদের হাতকে বিপরীত দিকে টানছে। নিউটনের তৃতীয় সূএ দিয়ে এটি ব্যাখা করা যায়।এখানে স্পষ্টত যে,স্প্রিংকে বিকৃত করার চেষ্টা করলে স্প্রিং বাধা দেয় এবং ছেড়ে দিলে আগের দৈর্ঘ্য ফিরে পায়। এক্ষেত্রে যে বলের কারনে পূর্বের আকার বা আয়তন ফিরে পেল সেই বলকেই স্থিতিস্থাপক বল বলে।
অর্থাৎ স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বাইরে থেকে বল প্রয়োগ করলে বস্তুর আকার পরিবর্তন ঘটানোর পর বল অপসারন করলে যে বলের কারনে পূর্বের আকার ফিরে পায় তাকে স্থিতিস্থাপক বল বলে।
স্প্রিং -কে বল প্রয়োগ করলে x মিটার সরন ঘটালে স্প্রিং দ্বারা কৃতকাজ W=1/2.kx^2 এখানে k স্প্রিং ধ্রুবক বা বল ধ্রুবক। এখানে স্প্রিং কে x মিটার সংকুচিত বা প্রসারিত করলে কৃতকাজ একই হবে। সুতরাং স্থিতিস্থাপক বল দ্বারা কৃতকাজ সরনের বর্গের সমানুপাতিক অর্থাৎ W~x^2. স্থিতিস্থাপক বলের বিপরীতে সরন দুইগুন করলে কাজ চারগুন হবে।
g. অভিকর্ষীয় বল দ্বারা কৃতকাজ :
কোন বস্তুকে নিচ থেকে উপরে উঠালে বা উপর থেকে নিচে নামালে অভিকর্ষীয় বল দ্বারা কৃতকাজ হয়।
পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R, ভর M এবং বস্তুুর ভর m এবং h উচ্চতায় বস্তুুটি তুলতে বা নামাতে অভিকর্ষ বল F=GMm/R^2 দ্বারা কাজ হবে W=Fh
বা W=GMm/R^2. h এখানে, GMm/R^2 ধ্রুব রাশি। সুতরাং অভিকর্ষ বল দ্বারা কৃতকাজ উচ্চতা বা সরনের সমানুপাতিক। অর্থাৎ W~ h.
এখন পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R এর তুুলনায় বস্তুুর দূরত্ব h খুব ক্ষুদ্র হয় অর্থাৎ h<
W=GMm/R^2. h হবে।
2.শক্তি(Power):
কাজ করার সামর্থ্য কে শক্তি বলে। যে পরিমাণ কাজ বস্তুু করতে পারে তা দিয়ে শক্তি পরিমাপ করা হয়। কাজের মতো শক্তিও একটি স্কেলার রাশি। শক্তির বিভিন্ন রুপ আছে যেমন :
1.যান্ত্রিক শক্তি(Mechanical energy)
2.তাপ শক্তি (Heat energy)
3.আলোক শক্তি (Light energy)
4.শব্দশক্তি (Sound energy)
5.চৌম্বক শক্তি (Magnetic energy)
6.তড়িৎ শক্তি (Electrical energy)
7.রাসায়নিক শক্তি(Chemical energy)
8.পারমাণবিক শক্তি(Nuclear energy)
9.সৌর শক্তি(Soler energy)
★যান্ত্রিক শক্তি (Mechanical energy):
কোন বস্তুুর আকার, আবস্থান বা গতির কারনে কাজ করার যে সামর্থ্য থাকে বা শক্তি থাকে তাকে যান্ত্রিক শক্তি বলে।
যান্ত্রিক শক্তি প্রধানত দুই প্রকার। যথা:
1.গতি শক্তি (kinetic energy)
2.স্থিতিশক্তি বা বিভব শক্তি (potential energy)
কেপলারের সূএ গুলো জানতে Click it.