যেসব পদার্থ কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে না কিন্তু গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে এবং বিদ্যুৎ পরিবহনের সাথে সাথে ঐ পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায় তাদেরকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় আয়নিত অবস্থায় থাকে। এই আয়নের মাধ্যমে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ বিদ্যুৎ পরিবহন করে। আয়নিক যৌগ এবং কিছু পোলার সমযোজী যৌগ গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়,
সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl),
কপার সালফেট (CuSO₂),
সালফিউরিক এসিড (H,SO),
পানি (H₂O),
ইথানয়িক এসিড (CH,COOH) ইত্যাদি গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে।
(তড়িৎ বিশ্লেষা আবার দুই প্রকার
(i) তীব্র তড়িৎ বিশ্লেষ্য (Strong Electrolyte):
যে সকল তড়িৎ বিশ্লেষ্য দ্রবণে বা গলিত অবস্থায় সম্পূর্ণরূপে আয়নিত অবস্থায় থাকে তাদেরকে তীব্র তড়িৎ বিশ্লেষ্য বলে।
যেমন ঃ
সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl), কপার সালফেট (CuSO₂), সালফিউরিক এসিড (H₂SO₄) ইত্যাদি।
(ii) মৃদু তড়িৎ বিশ্লেষ্য (Weak Electrolyte):
যে সকল তড়িৎ বিশ্লেষ্য দ্রবণে খুব অল্প পরিমাণে আয়নিত অবস্থায় থাকে তাদেরকে মৃদু তড়িৎ বিশ্লেষ্য বলে ।
যেমন: পানি (H₂O), ইথানয়িক এসিড
(CH3COOH) ইত্যাদি।তড়িৎদ্বার (Electrode)
তড়িৎ রাসায়নিক কোষে বিগলিত বা দ্রবীভূত তড়িৎ বিশ্লেষ্যের মধ্যে যে দুটি ইলেকট্রনীয় পরিবাহী অর্থাৎ ধাতব দন্ড বা গ্রাফাইট দন্ড প্রবেশ করানো হয় তাদেরকে তড়িৎদ্বার বলা হয়।
তড়িৎ রাসায়নিক কোষে একটি তড়িৎদ্বারে কোনো পরমাণু বা আয়ন ইলেকট্রন ত্যাগ করে। অর্থাৎ এ তড়িৎদ্বারে জারণ বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। অপর তড়িৎদ্বার থেকে ধনাত্মক আয়ন ইলেকট্রন গ্রহণ করে। অর্থাৎ এ তড়িৎদ্বারে বিজারণ বিক্রিয়া সংঘটিত হয় এবং সম্পূর্ণ কোষের মধ্যে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। যে তড়িৎদ্বারে জারণ বিক্রিয়া ঘটে তাকে অ্যানোড তড়িৎদ্বার আর যে তড়িৎদ্বারে বিজারণ বিক্রিয়া ঘটে তাকে ক্যাথোড তড়িৎদ্বার বলে।