ক্রায়োসার্জারি এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতিতে অত্যাধিক শীতের তাপমাত্রা প্রয়োগের মাধ্যমে অস্বাভাবিক বা অপ্রত্যাশিত রোগে আক্রান্ত টিস্যু/ ত্বক, কোষ ধ্বংস করার কাজে ব্যবহার হয় ।
ক্রায়োসার্জারিতে চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগ হয়ে থাকে। এ পদ্ধতির চিকিৎসায় প্রথমেই সিমুলেটেড সফটওয়্যার দ্বারা ক্যান্সার ইত্যাদিতে আক্রান্ত কোষ গুলোর অবস্থান ও সীমানা নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে রোগাক্রান্ত কোষ্ঠীতে আইসিটি যন্ত্রপাতির নিয়ন্ত্রিত মাইক্রো ক্যামেরা যুক্ত নল দিয়ে অবস্থান শনাক্ত করা হয় এবং অত্যন্ত সূক্ষ্ম সুচযুক্ত ক্রোয়োপ্রব প্রবেশ করিয়ে নির্ধারিত ক্রোয়জনিক গ্যাস প্রয়োগ করা হয়। তাপমাত্রা অত্যাধিক হ্রাস পেয়ে - 41 থেকে -196 ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড নেমে আসার কারণে নির্বাচিত টিস্যুটিতে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ওই নিম্নতম তাপমাত্রায় রক্ত ও অক্সিজেন সঞ্চালন সম্ভব না হওয়ার দরুন রোগাক্রান্ত টিউমার ক্ষতিসাধন হয়।
ক্রায়োসার্জারি চিকিৎসায় টিউমার এর ধরন অনুযায়ী এবং নির্দিষ্ট শীতলতায় পৌঁছানোর জন্য তরল নাইট্রোজেন, আর্গন, অক্সিজেন কার্বন-ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। এই গ্যাসগুলো ক্রোয়জনিক এজেন্ট নামে পরিচিত।
ক্রায়োসার্জারিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা অনেক বেশি যেমন আক্রান্ত কোষ বা টিস্যুর অবস্থান নির্ণয় এবং সমস্ত কার্যাবলী পর্যবেক্ষণ এর কাজে সারাক্ষণ কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ব্যবহৃত হয় । সেজন্য ক্রায়োসার্জারিতে চিকিৎসা ব্যবস্থায় অভিজ্ঞ করে তুলতে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার করা হয়।
রোগীর তথ্য, চিকিৎসার গবেষণার
ফলাফল ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটারের ডাটাবেজ সিস্টেম প্রয়োজন হয়।
ক্রয়োসার্জারিতে অনেক সুবিধা রয়েছে। অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির তুলনায় ক্যান্সার ও নিউরোসার্জারি চিকিৎসায় করে সার্জারি অনেক সাশ্রয়ী এবং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কম সময় লাগে। এ পদ্ধতিতে কোন জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই, ব্যথা, রক্তপাত অথবা অপারেশনজনিত কাটাছেঁড়া কোন জটিলতা নেই। রোগীকে কোন পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হয় না এবং অনেক ক্ষেত্রে সার্জারি শেষে রোগীকে হাসপাতালে থাকতে হয় না।
তবে আক্রান্ত কোষ এর সঠিক অবস্থান নির্ণয় ব্যর্থ হলে ক্রয়োসার্জারি ব্যবহারে জীবাণু শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে লিভার ও ফুসফুসের স্বাভাবিক গঠন বিনষ্ট কিংবা স্নায়ুবিক সমস্যার উদ্ভব হতে পারে।